Thursday, January 10, 2013

বেড়ালীয় কাণ্ড কারখানা

১) মুদ্রাৎ বনাম টেলিস্কোপ

মুদ্রাৎ ও টেলিস্কোপ 
মুদ্রাৎ অত্যন্ত সাহসী মহিলা। পাড়ার গুণ্ডা হুলো বেড়াল থেকে ওদের vet পর্যন্ত জানে সে কথা আর তাই তারা সবাই ওকে যথেষ্ট সমীহ করেই চলে। করবে নাই বা কেন? সময় বুঝে একটা থাপ্পড় না হলে হঠাৎ মুখের ঠিক সামনে এসে ফ্যাস করে দেয়া, দৌড়ে এসে কুটুস করে কামড়ে দেয়া এসব মুদ্রাতের মুদ্রাদোষ বলা যেতে পারে।আর এসব দিয়েই ও ভালই চালাচ্ছিল এতদিন। মুশকিল শুরু হলো টেলিস্কোপ আসাতে। টেলিস্কোপ কি আর হঠাৎ আজ এলো? না, তা তো নয়। টেলিস্কোপ ছিল গ্যারেজ এ । এদিকে গাড়ি দুটো গ্যারেজ এ ঢুকতে পায়ে না , ৫০টা জিনিস এখান-ওখান ছড়ানো তাই তাদের সব পরিষ্কার - টরিষ্কার করে টেলিস্কোপ কে ভেতরে আনা হলো । মুদ্রাৎ এবার যায়ে কোথায় ? সিঁড়ি দিয়ে নেমে হলের দিকে যেতে গিয়েই দেখে মাঝ রাস্তায় এত্তো বড় একটা তে-পায়া শয়তান দাঁড়িয়ে আছে। ব্যাস , মুদ্রাৎ পড়ল মুশকিলে । অনেকক্ষণ সিঁড়ির পাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তারপর এক দৌড়ে চলে এলো যেখানে আমরা সবাই বসেছিলাম। কিন্তু সে তো একদিন , বাকি দিন গুলো কি হবে? মুদ্রাৎ কে তো সারাদিন ঘুর ঘুর করতে হয় । সে সব পড়ল আটকা। মুদ্রাৎ বাথরুম যেতে পারছেনা , নীচে ওর পছন্দের বালিশে বসতে পারছেনা আর সব থেকে বাজে ব্যাপার হয়েছে যে মোটা আর কেঁদো ওকে দেখলেই এমন ফ্যাক ফ্যাক করে হাসছে যে ওর আর পালানোর জায়গা নেই।

২) কুদ্দিনের সাহসিকতা 
কুতুবুদ্দিন 

কেঁদো আমাদের পাড়ার মস্তান। অত বড় যে কোনো বেড়াল হতে পারে সে ওকে দেখার আগে আমি জানতাম না। এই এত বড় হাঁড়ির মত একটা মাথা তাতে বড় বড় লম্বা লম্বা গোঁফ সাদায় কালোয় মেশানো। বড় বড় থাবা , এই মোটা পেট আর বিশাল বড় ফাঁপানো একটা বড় ল্যাজ। শুনে যেমন ভয়ানক মনে হয় আসলে ও তেমনই কিন্তু যাদের ও ভালবাসে তাদের কাছে গিয়ে সরু গলায় মিউ মিউ করে ডাকে আর খেতে চায়ে। আর খেতেও যা পারে। আজ অবধি কোনদিন এমন হয়নি যে কেঁদো কে খাবার দেয়া হয়েছে অথচ ও খায়েনি।

পাড়ার যে এত বড় বড় সব কুকুর, সবাই কিন্তু কেঁদোকে ভয় পায়ে।তারা যদি ওকে দেখে দৌড়ে আসে, ও কিন্তু একটুও  ভয় না পেয়ে তাদের নাক শোঁকে। আর কয়েকটা কুকুর কে তো এমন ভয় দেখিয়েছে যে তারা বাড়ি থেকে বেরোবার আগে একবার দেখে নেয় যে কেঁদো নেই তো!

কেঁদো যখন খুব ছোট তখন ওকে একটা পাজি কুকুর কামড়ে ওর পা ভেঙ্গে দিয়েছিল। কিন্তু মাত্র দু সপ্তাহের মধ্যেই ও পুরো সেরে গিয়েছিল আর তারপর এখন ওকে ৮ ফুট উঁচু পাঁচিল থেকে লাফ মারতে দেখলে কে বিশ্বাস করবে যে ওরি এমন হয়েছিল?

৩) উদ্দিনের পাখি শিকার 
উদ্দিন, মুদ্রা আর পাখি 

উদ্দিন জানালায় বসে বসে পাখি দেখে। আমাদের পেছনের গাছে যে পাখিরা বাসা বেঁধেছে উদ্দিন তাদের সবাইকে চেনে। তারা ওড়া উড়ি করলে উদ্দিনও একবার জানলা থেকে লাফিয়ে নেমে আসে দরজার মুখে আবার একবার লাফিয়ে জানলায় উঠে যায়ে। কিন্তু ধরতে পারে না একজন কেও। পাখিরা উদ্দিনকে দেখে জিভ ভেংচে উড়ে যায়ে আর দূরের গাছের ডালে বসে খ্যাক খ্যাক করে হাসে।

উদ্দিন এই জন্যে একটা ভালো বুদ্ধি বের করেছে। মানুষে যেমন "indoor games" খেলে, উদ্দিন সেরকম ঘরের ভেতর পাখি শিকারের ব্যবস্থা করেছে। সরু কাঠিতে বাঁধা একটা সুতো আর সেই সুতোর মাথায় সরু চেন দিয়ে বাঁধা কয়েকটা পালক - যেটা হলো উদ্দিনের পাখি। একটা কাউকে লাগে সেই পাখি ওড়াবার জন্যে , কিন্তু একবার সেটা উড়তে শুরু করলে আর উদ্দিন কে পায়ে কে? যত পালকের আওয়াজ হয়, উদ্দিন তত লাফালাফি শুরু করে দেয়। আর সে কি একেকটা লাফ! কোনটা সামনে দিকে, কোনটা পেছনে , কোনটা হঠাৎ দৌড়ে এসে ঝাঁপিয়ে পড়া। সেসব উদ্দিন ভালই শিখে গেছে। এই নিয়েই এখন ও "আছে ব্যস্ত কাজে"... এতেই ও খুশি।

৪) গোব্দার চৌর্যবৃত্তি 
গোব্দা বসে আছে 

গোব্দা হলো আরেকটা ম্যাও যে আমাদের পাড়াতেই থাকে। এত ছোট ঠাস একটা বেড়াল যে ওকে দেখলেই মানুষের হাসি পায়ে। ছোট্ট ঠাস গোল একটা মুখ , নাকের কাছে থেকে সাদা ঠিক একটা তিনকোণ করে, ছোট্ট ঠাস একটা শরীর আর মাঝারি ল্যাজ। শুধু যদি এইটুকুই হত তাহলে কি আর ওকে নিয়ে আমার লেখার কিছু থাকত? গোব্দার বিশেষত্ব হলো ওর ডাক। ম্র্যাও ম্র্যাও করে যা ডাক ও ডাকতে পারে সে আর আমি কি বলব। তবে এটাই যা ভোরবেলা ওর ডাক শুনলে লোকে ঘুম থেকে উঠে বসে - ওরে বাবা রে ওটা কে রে - বলে।

এদিকে দেখতে অত ছোট হলে কি হবে, গোব্দা ব্যাটা বেশ পাজি। একদিন করেছে কি চুপিচুপি এসে দেখে গেছে যে কুদ্দিন কে কোথায় আমরা খেতে দিই, আর তারপরেই একদিন দেখি এসে চোর-চোর মুখ করে কুদ্দিনের বাটি থেকে হাঁউ হাঁউ করে খাবার খেয়ে নিচ্ছে। মোটা এদিকে চুপ করে ওর সামনে বসে আছে কিন্তু কিছু বলছে না। কি আশ্চর্য! ওদের সবার লোমের রং হলো কমলায় বাদামিতে মেশানো তাই দূর থেকে দেখলে চট করে বলাও যায়েনা যে কোনটা কে! কেঁদো একদিন জানতে পারলে না ... খাবার চুরি করা বেরিয়ে যাবে!

৫) কুদ্রুম আর গোব্দ্রাং এর মল্লযুদ্ধ 
কেঁদো 

কেঁদোর আর গোব্দার পরিচয় তো সবাই পেয়েই গেছে, তাহলে এবারে ওদের দুজনের একটা গল্প বলব। কেঁদো মাঝেমাঝেই আমাদের বাড়ির পেছনের পাঁচিল দিয়ে হেঁটে বেড়ায়। আমরা দেখি বাদামি রঙের একটা হুলো হাঁটছে ... ঠিক আছে তাহলে। একদিন ওরকম দেখে প্রথমে অতটা খেয়াল করিনি কিন্তু তারপরেই মনে হলো না, কিরকম অন্যরকম লাগছে যেন। আরে তাই তো! শুধু তো কেঁদো নয়, দুটো বাদামি বেড়াল যাচ্ছে হেঁটে হেঁটে পাঁচিল দিয়ে, একটার পেছনে একটা !! সে একটা দেখার মত জিনিস। আমরা হাঁ করে দেখছি যেতে যেতে গোবদা এক থাবা মারলো কেঁদোর পেছনে আর কেঁদো ঝাঁপিয়ে পড়ল পাশের বাড়িতে। সঙ্গে সঙ্গে গোব্দাও ঝাঁপালো। তারপরে শুনলাম মল্লযুদ্ধ হলো খানিকক্ষণ আর গোব্দার আকাশ কাঁপানো ডাক - ম্র্যাও!!!!!!!! তারপরে দুর্দাড় পালালো গোবদা।

তবে মাঝেমাঝেই ভোররাতের দিকে আমরা কেঁদো আর গোব্দার হেঁড়ে গলার ডাক শুনি। গোব্দাকে আমাদের বাড়ির সামনে ঘোরাফেরা করতেও দেখেছি বেশ কয়েকবার। এদিকে এলেই ও কেঁদোকে খোঁজে খেলবার আর মারপিট করবার জন্যে। ওদের দেখলে আর সন্দেহ থাকে না "আয় ভাই গান গায়ি, আয় ভাই হুলো" কাদেরকে মনে করে লেখা!

৬) উদ্দিন আর মুদ্রাতের সারাদিন 


আহা কী আনন্দ 
উদ্দিনদের সবথেকে মজার ব্যাপার হলো যে ওরা ১৬ ঘন্টা করে ঘুমোয় সারাদিনে। আমরা যখন কাজে যায়ি তখন টানা ৮ ঘন্টা ঘুম আর তারপরে রাত্তিরে তো আরো ৮ ঘন্টা ঘুমোতেই হয়। বিকেল-সন্ধ্যেতেও দরকার মত একটু একটু শুয়ে নেয়ে ওরা। শীতকালে মুদ্রাৎ নতুন শিখেছে আগুনের সামনে এসে শোয়া। কিছুই বলতে হয়না ওদের, ওরা ঠিক নিজের জায়গা বুঝে শুয়ে পড়ে ধুপ করে। তাছাড়াও কিছু কিছু পছন্দের জায়গা আছে ওদের। মোটার সব থেকে প্রিয় জায়গা হলো আমার মাথার বালিশের ওপর। কী যে আনন্দ পায়ে ওই জানে, কিন্তু রাত্তির ১০টা বাজলেই সুবোধ বালকের মত এসে যায়ে, গুঁতো গুঁতি করে আমার মাথার কাছে এসে , তারপর হাত পা চেটে পরিষ্কার হয়ে, দরকার হলে আমার মাথায়ও চেটে  দিয়ে তারপরে শোয়ে।
মুদ্রাতের সব থেকে পছন্দের জায়গা হলো আমাদের বসার ঘরের সোফায় রাখা একটা বালিশ। ও সেটার ওপর গুটিয়ে গোল হয়ে শুয়ে ঘুমোয়। আর কি তাড়াতাড়ি গরম করে নেয়ে পুরো জায়গাটা। এখন ওরা আমাদের সুটকেসের ওপরেও বেশ একটু শুয়ে চট করে ঘুমিয়ে নিছে।
মাঝে মাঝে উঠে একটু করে খায়ে আর সন্ধ্যেবেলা আমাদের সঙ্গে একটু খেলে টেলে কিন্তু আসলে সারাদিনের কাজ হলো ঘুমোনো। হাত পা গুটিয়ে ফাঁপিয়ে নিয়ে ভোঁস ভোঁস করে ঘুমোনো।

৭) কিটি ও ভিনির কথা 


ভিনি 
এরা দুজন হলো আমাদের বন্ধুদের লোমের ছেলে মেয়ে। কিটির বয়স হয়েছে প্রায় সাত আর ভিনির মাত্র দুই। ভিনিকে আমরা এক্কেবারে চোখের সামনে একটু একটু করে বড় হতে দেখছি। ছোট সরু মত ছিল ও, মুখটা একেবারে বেড়াল ছানার মত, তারপর আস্তে আস্তে গা টা মোটা হলো, মুখটা বেশ হুলোদের মত গোল হয়ে উঠলো, গলাটাও বেশ ম্র্যাও মত হলো, কিন্তু তাতে কি হবে? নিজেকে তো ও এখনো ছোট্ট এতটুকু বেড়াল ছানা ভাবে!
কিটি অনেক গম্ভীর স্বভাবের মহিলা। ভাইয়ের এইসব বোকা বোকা কথা বার্তা ও মোটেই পছন্দ করে না। এখন ওর একটু একটু বয়স হচ্ছে বোঝা যায়ে। শীতকালে ও আগুনের সামনে ওর গোল বিছানায় গুটিয়ে শুয়ে থাকতেই ও বেশ ভালবাসে।
কিটি 
কিটি এক সময়ে রাস্তার বেড়াল ছিল। রেন্টন বলে একটা শহরে ও অনেকদিনই রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়েছে। তারপর ওখানকার animal shelter থেকে লোক এসে ওকে বাঁচায়। নিয়ে গিয়ে দেখাশোনা করে, তারপর আমাদের বন্ধুরা ওকে নেয়। সেই থেকে ও কায়েমী ভাবে রাজকন্যার হালে বসবাস করে চলেছে। ভিনিকে তো কালিফোর্নিয়ায় আর কদিন পরেই মেরে ফেলা হত। ওখানে বেড়াল কুকুর বেশি হয়ে গেলেই মেরে ফেলে। তাই ওয়াশিংটনের animal shelter গুলো ওখান থেকে কুকুর বেড়াল বাঁচিয়ে নিয়ে আসে। ভিনিও তাই এসেছিল। ওকে তারপর একজনেরা বাড়ি নিয়ে গিয়ে মানুষ করেছিল কিছুদিন, তার পরে ওকে adoptionএর জন্যে দেয়া হয়। সেখান থেকে আমাদের বন্ধুরা ওকে নিয়ে আসে। ও এখন সারা বাড়ি দৌড়ে বেড়ায় আর কিটি খেতে বসলে ওর থেকে খাবার টেনে টেনে নিয়ে খেয়ে ফেলে। আর ওদের বাবা-মা রা ওদের ভীষণ ভাবে আহ্লাদ দিয়ে মানুষ করছে।

৮) তিন ক্ষুদ্রাতের দিগ্বিজয়
তিন ক্ষুদ্রাৎ

এতই ক্ষুদ্র তারা যে তাদের নাম ক্ষুদ্রাৎ। কিন্তু তাই বলে তারা তুচ্ছ নয় মোটেও। এক একটা একেবারে ১০০ জনের মত, তাদের সঙ্গে পাল্লা দেবে কে? ক্ষুদ্রাত রা আমাদের বাড়িতে দু সপ্তাহ থেকে গেল। ওদের কাজ ছিল খেয়ে খেয়ে মোটা হওয়া , মানে ওরা মোটা হতেই এসেছিল কারণ ওদের ছোটবেলায় একটা অপারেশন হয় যেটার জন্যে একটু মোটা হওয়া দরকার। তো ওরা খেত-দেত আর খেলে করে বেড়াত সারাদিন। সেই জন্যেই ওদের এনে রাখা।

ওরা এতই ছোট যে ওদের একটা বাথরুমে রাখা হয়েছিল যাতে ওরা এতে ওতে ঢুকে না পরে, ইলেকট্রিক এর তার না চিবিয়ে দেয়ে আর অবশ্যই যেন মোটা আর মেয়ের খপ্পরে না পড়ে। যতই যাই হোক, মোটা তো হুলো। কামড়ে দিতেও পারে, কিছু না তো খামোকা ভয় দেখাতে পারে। তাই ওরা বাথরুমে থাকছিল।যেই আমাদের গলার আওয়াজ পাওয়া অমনি শুরু হয়ে যাবে সরু গলায় মিউ মিউ। আর দরজা খুললেই বন্দুকের গুলির মত ছিটকে বেরিয়ে যাচ্ছিল তিন দিকে। আর তারপর কি খেলা আর কি দৌড়, কি উল্টে পাল্টে গড়াগড়ি দেয়া, এ ওর কান কামড়ানো, কত রকমের মারপিট আর খেলা।একবার তো একটাকে ফ্রিজের পেছন থেকে বের করতে গিয়ে আমার পিঠে ব্যথা হয়ে গেল।

এই ক্ষুদ্রাৎরা খেয়ে দেয়ে মোটা হয়ে ম্যাও ম্যাও করতে করতে ফেরত গেল আর তারপর? তারপর তাদের ছবি দেয়ার আগেই টুপটাপ করে সবাই ওরা adopted হয়ে গেল, দেখতে না দেখতেই!

৯) আর যারা বাকি রইলো - অস্কার , টোবি (স্বামীজি ম্যাও), ডাকোটা (ডাকিনি বুড়ি), নুডলস ....

এরা হল বাকিরা, যাদের আমরা চিনি কিন্তু খুব বেশি করে চিনি বলা যায়ে না। এরা সবাই আমাদের চেনাশোনা কারুর বাড়ির ম্যাও। অস্কার হলো রেশমি কালো লোমের ম্যাও, স্বভাবে অত্যন্ত ভালো কিন্তু একটাই মুশকিল হলো যে মানুষে সোফায় বসলে, ও সোফার পিঠে উঠে সবার চুল চিবিয়ে দেয়ে! আর মাঝে মাঝে দরজা খোলা থাকলে দৌড়ে বেরিয়ে যায়ে তারপর ওর বাবা আবার ওকে ধরে নিয়ে আসে। না হলে অর মাথা খুবই ঠাণ্ডা। ভালো ম্যাও ও।

ডাকোটা 
টোবি হলো রামকৃষ্ণ মিশনের এক স্বামীজি দাদুর ম্যাও। সারাদিন ও জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে বেড়ায় আর রাত্তিরে ক্যাট ডোর দিয়ে ঘরে ঢুকে আসে। ১১ বছর বয়েস অর কিন্তু কোনো ঝামেলা করে না দাদু কে। অর লোমের রং ও গেরুয়া তাই স্বামীজি ম্যাও বলা যেতেই পারে ওকে।

ডাকোটা একটু ডাকিনি বুড়ি মত। ওর স্বভাব খুব ভালো না, কালো কুচকুচে লোম আর ছোট্ট এতটুকু ওর গা। বাড়িতে লোকজন এলে ও পর্দার পেছনে লুকিয়ে থাকে তারপর পালিয়ে যায়ে। আর যাওয়ার আগে পেছন ফিরে ফ্যাস করে দেকে দিয়ে যায়ে। ওর মা যদি ওকে কলে নিয়ে ওপরে রেখে আসতে যায়ে তাহলে কোলে করে চলে যেতে যেতেও দাঁত খিঁচিয়ে ফ্যাস করে দিতে ভুলে যায়ে না কিন্তু।
নুডলস খুব সুন্দরী মহিলা। আমরা যে দোকান থেকে মোটাদের জন্যে খাবার কিনি, সেই দোকানে বসে নুডলস। বয়েস ওর ১১-১২, কিন্তু ধপধপে সাদা লোমের রং আর তেমনি সুন্দর সুন্দর দেখতে সোয়েটার পরে থাকে ও। আমরা যেদিন দেখেছি সেদিন ও হালকা হলদে সোয়েটার পরে বসেছিল ক্যাশ কাউন্টার-এর ওপর।আরো মজার ব্যাপার হলো ওই একমাত্র বেড়াল যাকে আমি শান্ত মনে লীশ পরে বসে থাকতে দেখেছি। নুডলস দেখার মত মহিলা।

১০) "কিন্তু সবার চাইতে ভালো"

আরো কিন্তু অনেক ম্যাও আছে সারা পৃথিবীতে। তাদের কেউ কেউ আরামে আছে, এই যাদের গল্প বললাম তাদের মত, কিন্তু আরো অনেকে আছে যাদের কেউ দেখে না, তাদের যে দেখা উচিত, সেই কথাও কেউ ভাবে না। তারাও কিন্তু এদেরই মত নরম লোমের, তাদের সুন্দর দেখতে, তাদের ছোট ছোট ছানাগুলো-ও এদেরই মত খেলা করে। বেড়াল পোষার কথা সবাই ভেবে দেখো। আর সব থেকে বড় কথা এই যে বেড়াল দেখলে ভয় পেয়ে দুরদুর করে তাড়িয়ে দিও না, সামান্য একটু মাছের কাঁটা খেয়েও ওরা ভালই থাকে। আর নিজেদের ছোট ছেলে মেয়েদের শিখিও কি করে বেড়াল (শুধু বেড়াল বা কেন? যে কোনো পশুকেই ) কি করে ভালবাসতে হয় আর ভালো রাখতে হয়।



No comments: